সন্ত্রাসবাদী সংগঠন নয়, যে কোনো ব্যক্তিকেই সন্ত্রাসী সন্দেহে গ্রেফতার করা যাবে। পাশাপাশি আরও বলা হয়, আগামী দিনে যে কোনও রাজ্যের বাসিন্দার বাড়িতে তল্লাশি চালাতে ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার অধিকার থাকবে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্যের পুলিশের অনুমতিও লাগবে না এনআইএ-র। অভিযুক্তকে নিজেকেই নির্দোষ প্রমাণ করতে হবে বিশেষ আদালতে। এতদসত্ত্বেও মহুয়া মৈত্র-র মতো ব্যতিক্রমী দু’একজন ব্যতিক্রম ছাড়া কোনো রাজনৈতিক দলই সোচ্চারে ইউএপিএ-এর বিরোধিতা করেনি। তিলমাত্র নাগরিক সচেতনতা গড়ে ওঠেনি। বরং যার বিরুদ্ধে ইউএপিএ প্রয়োগ হয়েছে তাঁকে যাতে সমাজের চোখে হীন প্রতিপন্ন করা যায় সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ চেষ্টা জারি রেখেছে এক শ্রেণির সংবাদমাধ্যম। অরবিন্দ কেজরিওয়াল তো প্রকাশ্যেই উমর খলিদের গ্রেফতারি সমর্থন করেছেন। নিজেকে সাচ্চা হিন্দু প্রমাণ করার দায় আছে যে!
বর্তমান শাসক না হয় এই আইনকে সবচেয়ে নৃশংস ভাবে প্রয়োগ করেছে। কেন এর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিবাদ করেন না বিরোধীরা? ভুললে চলবে না, ইউপিএ আমলেই অপারেশন গ্রিন হান্টের জন্ম। কোন অপরাধে জিএন সাইবাবাকে ইউএপিএ প্রয়োগ করে দশবছর জেল খাটানো হলো, কে দেবে তার দুর্ভোগের মূল্য, এ সব প্রশ্নের উত্তরের খোঁজ ভোটবাক্সে কোনো প্রভাব ফেলবে না, বরং দেশের একটা বড় অংশ নরেন্দ্র মোদির লব্জ ধার করে অ্যান্টি ন্যাশানাল দাগিয়ে দিতে পারে, তাই চুপ নেতারা।
এ কথা ঠিক, সিপিআইএম-এর নির্বাচনী প্রচারপত্রে ইউএপিএ বাতিলের কথা ফলাও করে বলা হয়েছে। কিন্তু তথ্য বলছে , কেরলে ২০১৬-২০২১ এর মধ্যে অন্তত ১৪৫ জনের ক্ষেত্রে এই মামলা ব্যবহার করা হয়েছে। তাহলে, প্রচারপত্রের আশ্বাস কি বিশ্বাসযোগ্য? আসল সত্য হলো, যে যায় লঙ্কায়, সেই হয় রাবণ। শার্জিলের মায়ের পথ চেয়ে বসে থাকা কবে শেষ হবে, এ প্রশ্নে আত্মমগ্ন রাজনীতিবিদদের কিস্যু এসে যায় না।